×

প্রতিদিন মাত্র ৭ টাকা জমিয়ে প্রতি মাসে পেনশন তুলুন ৫০০০ টাকা, মধ্যবিত্তদের জন্য দুর্দান্ত স্কিম কেন্দ্রীয় সরকারের

দিন দিন যেভাবে দেশে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী প্রজন্ম নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত।

দিন দিন যেভাবে দেশে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী প্রজন্ম নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত। যদি আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সরকার বেশ কিছু প্রকল্প হাজির করেছে। এই প্রকল্পগুলো অনুযায়ী খুব কম টাকা বিনিয়োগ করে যেকোনো ব্যক্তি তার ভবিষ্যৎ জীবন আর্থিকভাবে সুনিশ্চিত করতে পারবে। যারা সরকারি চাকরি করেন তারা রিটারমেন্টের পর পেনশন পান। কিন্তু দেশে সরকারি চাকরির পরিমাণ খুবই কম।

আমাদের ভারতবর্ষের মূলত কৃষি নির্ভরশীল দেশ। এখানে অধিকাংশ মানুষ ব্যবসায়ী, দিনমজুর। তাদের কথা মাথায় রেখে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকল্প আনা হয়েছে। এই অবস্থায় দেশের অধিকাংশ মানুষ বৃদ্ধ বয়সে যাতে আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকেন সে ব্যবস্থা করতে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু প্রকল্প আনা হয়েছে। এরজন্য বেশ কয়েক বছর আগেই চালু করা হয়েছে পেনশন প্রকল্প। সরকারি এই প্রকল্প দেশের আরও বিভিন্ন প্রকল্পকে এক ধাক্কার পেছনে ফেলে দিয়েছে।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি প্রথম বার কেন্দ্রের মসনদে পর দেশের প্রান্তিক মানুষের আর্থিক দৈনদশা কাটাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্পৎ(prakalpa) হাতে নেয়। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে প্রথমেই রয়েছে অটল (atal pension yojna) পেনশন যোজনা। বিজেপির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর নামাঙ্কিত এই প্রকল্পটির জনপ্রিয়তা গত কয়েক বছরে দেশের শহরাঞ্চল থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও ছড়িয়ে গিয়েছে হু হু করে। এই অটল পেনশন যোজনা মূলত পিপিএফ অর্থাৎ (public provident fund) অ্যাকাউন্টের একটি বিশেষ সংস্করন বলা যায়। এই ফান্ড মূলত বেশ কয়েক দশক আগে বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক ভাবে সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তৈরি করা হয়েছিল।

অটল পেনশনের সুবিধা নিয়েছেন দেশের বেশির ভাগ দিন মজুর মানুষ। কিন্তু জানেন কি এই প্রকল্পে ঠিক কি কি সুবিধা রয়েছে? জানেন কে কিভাবে এই প্রকল্প ভবিষ্যতে বৃদ্ধ বয়সে আপনার জীবনকে নিরাপদে রাখতে পারে? এই সমস্ত তথ্য জানাতেই আজকের এই প্রতিবেদন। আসুন জেনে নিন অটল পেনশনের সুবিধা বিস্তারিত তথ্য।

অটল পেনশন প্রকল্পের ব্যাপারে সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় ১৮ বছর বয়স থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও ব্যক্তি যদি তাঁর ৬০ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত প্রতিমাসে নিয়ম করে টাকা জমাতে পারেন, তাহলে ওই ব্যক্তির ৬০ বছর বয়স পার হওয়ার পর থেকে প্রতিমাসে নিয়ম করে জমানো টাকা পেনশন হিসেবে পাবেন। প্রতিমাসে পেনশনের পরিমাণ ন্যূনতম ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। থবে ৪০ বছর পড়িয়ে গেলে কোনো ব্যক্তি আর এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে না। অর্থাৎ এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে চাইলে ৪০ বছরের মধ্যেই কোনও ব্যক্তিকে এই প্রকল্পে নাম লেখাতে হবে। এক নজরে দেখে নিন অটল পেনশন প্রকল্পের কয়েকটি সুবিধা।

১: ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত যেকোনো ব্যক্তির এই প্রকল্পের আওতায় নাম লেখাতে পারেন।

২: ৪০ বছর পার করে গেলে কোন ব্যক্তি আর এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন না।

৩: এই প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্রাহক ৬০ বছর পার করার পর কত টাকা পেনশন চান সেটা সেই ব্যক্তিকেই ঠিক করতে হবে।

৪: এই প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্রাহককে ৬৯ বছর পর্যন্ত নিয়ম করে টাকা জমাতে হবে। তবে ৬০ বছর পর আর কোন টাকা দিতে হবে না। ৬০ বছর পর্যন্ত জমানো মোট টাকার উপর সুদ হিসাব করে ওই ব্যক্তিকে পেনশন দেওয়া হবে।

৫: কোনো কারনে যদি এই প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্রাহক মারা যায় তবে সেক্ষেত্রে গ্রাহকের নমিনিকে সরকারের পক্ষ থেকে মোট টাকার উপর সুদ হিসাব করে সম্পূর্ণ টাকা এককালীনভাবে ফেরত দেওয়া হবে।

৬: এই প্রকল্পে পেনশনের পরিমাণ সর্ব নিম্ন ১ হাজার টাকা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা।

৭: এই প্রকল্পে জমা হওয়া টাকা করমুক্ত অর্থাৎ ট্যাক্স ফ্রি।

৮: এই অটল পেনশন প্রকল্পটি দেশের সবকটি পোস্ট অফিস ও ব্যাঙ্কে উপলব্ধ রয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে তার নিকটবর্তী ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এই প্রকল্প আওতায় আসতে পারবেন। তবে এর জন্য ব্যক্তিকে সেই পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কে নিজের নামে অ্যি
অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

এখন আসুন এই প্রকল্পের টাকার হিসাবটি জেনে নেওয়া যাক।
ধরুন কোন ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর। সেই ব্যক্তি যদি ৬০ বছর পার করার পর প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা পেনশন চান তবে সেই ব্যক্তিকে প্রতি মাসে সরকারের কাছে ২১০ টাকা করে জমাতে হবে। অর্থাৎ ওই ব্যক্তিকে দৈনিক মাত্র ৭ টাকা করে জমা করতে হবে। এইভাবে যদি কোন ব্যক্তি ৬০ বছরের পর এক হাজার টাকা প্রতি মাসে পেনশন চান তবে সেই ব্যক্তিকে ৬০ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত প্রতিমাসে ৪২ টাকা করে সরকারের কাছে জমা করতে হবে। আপনি যদি এই প্রকল্পটি গ্রহণ করতে চান তাহলে আর দেরি না করেন আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিস বা যেকোনো ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করুন।

Related Articles